মায়ানমারে শক্তিশালী ভূমিকম্প, ভারতের টেকটনিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ।

মিয়ানমারে শক্তিশালী ভূমিকম্প: ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলেও কম্পন অনুভূত

২০২৫ সালের মার্চ মাসে মিয়ানমারে এক শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে, যার প্রভাব ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতেও স্পষ্টভাবে টের পাওয়া গেছে। রাত ৮টা ২৫ মিনিটের দিকে এই ভূমিকম্পটি আঘাত হানে, যার ফলে বহু মানুষ আতঙ্কিত হয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসে।

ভূমিকম্পের মাত্রা ও কেন্দ্রবিন্দু

ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে (USGS) অনুসারে, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৬.৫ রিখটার স্কেলে। এর উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমারের সাগাইং অঞ্চলের কাছাকাছি, ভূগর্ভের প্রায় ৭৫ কিলোমিটার গভীরে। এই গভীরতা ভূমিকম্পকে অপেক্ষাকৃত কম ধ্বংসাত্মক করলেও, এর কম্পন বিস্তৃত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে।

ভারতের যেসব রাজ্যে কম্পন অনুভূত হয়েছে

এই ভূমিকম্পের কম্পন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে অনুভূত হয়েছে, বিশেষ করে:

  • আসাম (বিশেষ করে গुवাহাটি ও কাছাড় অঞ্চল)
  • ত্রিপুরা
  • নাগাল্যান্ড
  • মণিপুর
  • মেঘালয়
  • পশ্চিমবঙ্গের কিছু অংশ

স্থানীয় মানুষ জানিয়েছে, তারা কয়েক সেকেন্ড ধরে ঘরবাড়ি কাঁপতে দেখেছে, এবং অনেকেই দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যান।

ক্ষয়ক্ষতি ও আহতের খবর

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত, মিয়ানমারে বা ভারতের কোনো অংশে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। তবে কিছু ভবনের ছোটখাটো ফাটল এবং বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয় প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দল পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।

পূর্ববর্তী ভূমিকম্পের ইতিহাস: মিয়ানমার ও ভারতীয় সীমান্ত অঞ্চল

মিয়ানমার একটি ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল, যা ভারতীয় ও ইউরেশিয়ান টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত। এর আগে, ২০১৬ সালে মিয়ানমারে একটি ৬.৮ মাত্রার ভূমিকম্প ঘটে, যাতে বহু প্রাচীন স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলেও মাঝে মাঝে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হয়, যার ফলে অঞ্চলটির ভূমিকম্প-বিষয়ক সচেতনতা জরুরি।

এই ধরনের ভূমিকম্পে কী করণীয়?

ভূমিকম্পের সময় ও পরে নিচের নির্দেশনাগুলো মেনে চলা উচিত:

  • ঘরের মধ্যে থাকলে মাথা ও ঘাড় ঢেকে টেবিল বা মজবুত আসবাবের নিচে আশ্রয় নিন।
  • বাইরে থাকলে উন্মুক্ত স্থানে যান, যেখানে বিদ্যুতের তার বা ভবন নেই।
  • ভূমিকম্প থেমে গেলে টর্চ, মোবাইল, প্রাথমিক চিকিৎসার কিট প্রস্তুত রাখুন।
  • আফটারশকের জন্য সতর্ক থাকুন।

প্রশাসনের প্রস্তুতি ও সাধারণ মানুষকে পরামর্শ

ভারতের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (NDMA) সাধারণ মানুষকে ভূমিকম্পের সময় নিরাপত্তা বজায় রাখতে সচেতনতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে। প্রয়োজন হলে স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অফিসে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।



ভারতের মানচিত্রে ভূমিকম্পের প্রভাব ও টেকটনিক প্লেটের নড়াচড়া
"ভারতের মানচিত্রে ভূমিকম্পের স্পট, যা উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে বেশি প্রভাব ফেলেছে।"

ভূমিকম্পের প্রভাব

ভূমিকম্পের ফলে মায়ানমারের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং কিছু এলাকায় ভূমিধসের খবর পাওয়া গেছে। যদিও এখন পর্যন্ত বড় ধরনের প্রাণহানির খবর পাওয়া যায় ১০০০ ছাড়িয়ে গেছে। তবে স্থানীয় প্রশাসন ও উদ্ধারকারী দল পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য যেমন মিজোরাম, মণিপুর, নাগাল্যান্ড এবং আসামে কম্পন অনুভূত হয়েছে। গুয়াহাটির বাসিন্দারা জানিয়েছেন যে, তারা বেশ কয়েক সেকেন্ড ধরে দুলুনি অনুভব করেছেন এবং অনেকেই সতর্কতামূলকভাবে বাড়িঘর থেকে বেরিয়ে যান। কলকাতাতেও এই ভূমিকম্পের হালকা কম্পন অনুভূত হয়েছে।

ভারতের টেকটনিক অবস্থা ও ভূমিকম্পের ঝুঁকি

ভারত একটি ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত, কারণ এটি ইন্দো-অস্ট্রেলিয়ান ও ইউরেশিয়ান টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত। উত্তর-পূর্ব ভারত এবং হিমালয় অঞ্চল উচ্চ মাত্রার ভূমিকম্পপ্রবণ বলে বিবেচিত হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতীয় উপমহাদেশের প্লেটটি উত্তর দিকে ইউরেশিয়ান প্লেটের দিকে সরছে, যা এই অঞ্চলে ভূমিকম্পের সম্ভাবনা কারণ হতে পারে।

আরও খবর পড়ুনঃ মিয়ানমারে ৭.৭ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প: ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি৷

ইতিহাস বলছে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল অতীতে বেশ কয়েকটি বড় ভূমিকম্পের সাক্ষী হয়েছে। ১৮৯৭ সালের আসামের ভূমিকম্প (৮.১ মাত্রার), ১৯৫০ সালের অরুণাচল প্রদেশ ভূমিকম্প (৮.৭ মাত্রার) এবং ২০১৬ সালের মণিপুর ভূমিকম্প (৬.৭ মাত্রার) এই অঞ্চলের ভূমিকম্পপ্রবণতার প্রমাণ দেয়। নেপালে ভূমিকম্প হয়েছিলো সেটা তোমরা ও ভালো করে জানো ২০১৬ এপ্রিলে। 

ভারতের প্রস্তুতি ও ভূমিকম্প প্রতিরোধ ব্যবস্থা

ভূমিকম্প মোকাবিলায় ভারতের ভূতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগ (Geological Survey of India), জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (NDMA) এবং বিভিন্ন রাজ্যের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা সক্রিয় রয়েছে। তবে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকাগুলোতে আরো উন্নত মানের ভূমিকম্প প্রতিরোধী অবকাঠামো গড়ে তোলা প্রয়োজন।

সতর্কতামূলক ব্যবস্থা:

  • সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনকে ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকাগুলোর জন্য আধুনিক বিল্ডিং কোড ও নির্মাণ বিধিমালা অনুসরণ করতে হবে।
  • দুর্যোগকালীন উদ্ধার ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করা জরুরি।
  • জনগণের মধ্যে ভূমিকম্প মোকাবিলার জন্য সচেতনতা বাড়ানো দরকার।

মিয়ানমারে শক্তিশালী ভূমিকম্প: ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলেও কম্পন অনুভূত

২০২৫ সালের মার্চ মাসে মিয়ানমারে এক শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে, যার প্রভাব ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতেও স্পষ্টভাবে টের পাওয়া গেছে। রাত ৮টা ২৫ মিনিটের দিকে এই ভূমিকম্পটি আঘাত হানে, যার ফলে বহু মানুষ আতঙ্কিত হয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসে।

ভূমিকম্পের মাত্রা ও কেন্দ্রবিন্দু

ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে (USGS) অনুসারে, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৬.৫ রিখটার স্কেলে। এর উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমারের সাগাইং অঞ্চলের কাছাকাছি, ভূগর্ভের প্রায় ৭৫ কিলোমিটার গভীরে। এই গভীরতা ভূমিকম্পকে অপেক্ষাকৃত কম ধ্বংসাত্মক করলেও, এর কম্পন বিস্তৃত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে।

ভারতের যেসব রাজ্যে কম্পন অনুভূত হয়েছে

এই ভূমিকম্পের কম্পন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে অনুভূত হয়েছে, বিশেষ করে:

  • আসাম (বিশেষ করে গুহাটি ও কাছাড় অঞ্চল)
  • ত্রিপুরা
  • নাগাল্যান্ড
  • মণিপুর
  • মেঘালয়
  • পশ্চিমবঙ্গের কিছু অংশ

স্থানীয় মানুষ জানিয়েছে, তারা কয়েক সেকেন্ড ধরে ঘরবাড়ি কাঁপতে দেখেছে, এবং অনেকেই দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যান।

ক্ষয়ক্ষতি ও আহতের খবর

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত, মিয়ানমারে বা ভারতের কোনো অংশে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। তবে কিছু ভবনের ছোটখাটো ফাটল এবং বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয় প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দল পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।

পূর্ববর্তী ভূমিকম্পের ইতিহাস: মিয়ানমার ও ভারতীয় সীমান্ত অঞ্চল

মিয়ানমার একটি ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল, যা ভারতীয় ও ইউরেশিয়ান টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত। এর আগে, ২০১৬ সালে মিয়ানমারে একটি ৬.৮ মাত্রার ভূমিকম্প ঘটে, যাতে বহু প্রাচীন স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলেও মাঝে মাঝে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হয়, যার ফলে অঞ্চলটির ভূমিকম্প-বিষয়ক সচেতনতা জরুরি।

এই ধরনের ভূমিকম্পে কী করণীয়?

ভূমিকম্পের সময় ও পরে নিচের নির্দেশনাগুলো মেনে চলা উচিত:

  • ঘরের মধ্যে থাকলে মাথা ও ঘাড় ঢেকে টেবিল বা মজবুত আসবাবের নিচে আশ্রয় নিন।
  • বাইরে থাকলে উন্মুক্ত স্থানে যান, যেখানে বিদ্যুতের তার বা ভবন নেই।
  • ভূমিকম্প থেমে গেলে টর্চ, মোবাইল, প্রাথমিক চিকিৎসার কিট প্রস্তুত রাখুন।
  • আফটারশকের জন্য সতর্ক থাকুন।

প্রশাসনের প্রস্তুতি ও সাধারণ মানুষকে পরামর্শ

ভারতের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (NDMA) সাধারণ মানুষকে ভূমিকম্পের সময় নিরাপত্তা বজায় রাখতে সচেতনতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে। প্রয়োজন হলে স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অফিসে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

FAQ: মিয়ানমার ভূমিকম্প নিয়ে সাধারণ জিজ্ঞাসা

১. মিয়ানমারে ভূমিকম্প কতটা শক্তিশালী ছিল?

এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬.৫ রিখটার স্কেলে। এটি একটি মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প, তবে কেন্দ্রবিন্দু গভীর হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা তুলনামূলকভাবে কম ছিল।

২. ভারতের কোথায় কোথায় কম্পন টের পাওয়া গেছে?

আসাম, মেঘালয়, মণিপুর, নাগাল্যান্ড, ত্রিপুরা এবং পশ্চিমবঙ্গের কিছু অঞ্চলে এই কম্পন অনুভূত হয়েছে।

৩. এই ভূমিকম্পের কারণে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কি?

এখন পর্যন্ত বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই। তবে কিছু স্থানে হালকা ফাটল ও আতঙ্ক ছড়ানোর খবর পাওয়া গেছে।

৪. মিয়ানমার অঞ্চলে এর আগেও কি বড় ভূমিকম্প হয়েছে?

হ্যাঁ, ২০১৬ সালে একটি ৬.৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল এবং ২০১১ সালেও বড় ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটে, যা বিস্তৃত অঞ্চলে প্রভাব ফেলে।

সূত্র: USGS, NDMA India, ANI, PTI

শেষ কথা

মিয়ানমারে ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ যে কোনো সময় ঘটতে পারে। তাই আমাদের উচিত এমন সময়ে সঠিক তথ্য জানানো এবং নিরাপদে থাকা। প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দল যে প্রস্তুত রয়েছে, তা আমাদের আশ্বস্ত করে।

সূত্র: USGS, NDMA India, ANI, PTI

📢 IPL LIVE SCORE 2025


আপডেট পেতে, আমাদের সাথেই থাকুন ! পাশে থাকুন ৷ খবরের সাথেই থাকুন ! Breaking News Todays সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি: Facebook, Facebook page, Whatsapp Group. 📢 ব্রেকিং নিউজ: আজকের সর্বশেষ সংবাদ পড়ুন!
Author Image

Writer[samim]

আমি সামিম। গত ৮ বছর ধরে ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে কাজ করছি। রাজনীতি থেকে বিদেশি খবর,পশ্চিমবঙ্গের খবর, ক্রিকেট,পুর্ব বর্ধমানের খবর, ভাইরাল তথ্য থেকে বিনোদন—সব ক্ষেত্রেই আমি আপডেট ও নির্ভুল খবর পাঠকের কাছে পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সত্য ও নির্ভরযোগ্য তথ্য পরিবেশনই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

📧 ইমেইল: skmdsamimsms@gmail.com

🌐 ওয়েবসাইট: Breaking News Todays

🔵 Facebook | 🐦 X handle | 📸 Threads

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ