বাঘাযতীনে বহুতল ভবন হেলে পড়েছে: বিপর্যয়ের আশঙ্কা, বাসিন্দাদের নিরাপত্তা সংকট
বাঘাযতীন, কলকাতা: কলকাতার বাঘাযতীন অঞ্চলে একটি বহুতল ভবন হেলে পড়ার ঘটনা এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল গভীর রাতে, যখন ভবনের বাসিন্দারা একটি বিকট শব্দ শুনতে পান। সকালে বিষয়টি স্পষ্ট হয়, ভবনের একটি অংশ পাশের দিকে হেলে গেছে। এলাকাবাসী এবং স্থানীয় প্রশাসনের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
ভবনের অবস্থা ও বিপদ
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ভবনটি প্রায় ১০ বছরের পুরনো এবং আগে থেকেই এর কাঠামোগত দুর্বলতার লক্ষণ দেখা যাচ্ছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ভবনের মেঝেতে ফাটল, দেয়ালে চিড় এবং পানির পাইপের লিকেজ ছিল। এইসব সমস্যা নিয়ে একাধিকবার নির্মাতা এবং পুরসভাকে জানানো হলেও, কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
হেলে পড়া অংশটি পার্শ্ববর্তী একটি সরু রাস্তায় ঝুঁকে রয়েছে। এটি যে কোনো মুহূর্তে সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। এদিকে, পাশের আরও কয়েকটি ভবনের বাসিন্দারাও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
![]() |
বাঘাযতীনে বহুতল ভবন হেলে পড়েছে: বিপর্যয়ের ছবি ৷ |
বাসিন্দাদের উদ্বেগ ও প্রশাসনের তৎপরতা
ভবনের বাসিন্দারা এই ঘটনায় দিশেহারা। এক বাসিন্দা বলেন, "আমরা গভীর আতঙ্কে আছি। রাতে ঘুমাতে পারি না। যদি ভবনটি ভেঙে পড়ে, আমাদের জীবন বিপন্ন হতে পারে।"
স্থানীয় প্রশাসন ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছে। কলকাতা পৌরসভার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভবনের বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রবেশপথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে (ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট টিম) প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে কী পাওয়া গেছে?
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ভবনটির নকশা এবং নির্মাণে গাফিলতি ছিল। নির্মাণকাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহৃত হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। তাছাড়া, এলাকাটির মাটির প্রকৃতি ভবনের ভার সহ্য করার জন্য উপযুক্ত নয় বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।
কলকাতা পৌরসভার এক কর্মকর্তা বলেন, "আমরা এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছি। ভবনটির স্থিতিশীলতা যাচাই করতে ইঞ্জিনিয়ারদের একটি বিশেষ দল মোতায়েন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়ানোর জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
বিস্তারিত পড়ুনঃ ভাঙার কাজ শুরু হল বাঘাযতীনের সেই ফ্ল্যাটবাড়ি
বাসিন্দাদের দাবি
এলাকার বাসিন্দারা এই ঘটনার জন্য নির্মাতা এবং প্রশাসনকে দায়ী করেছেন। তাঁদের দাবি, নির্মাণ সংস্থার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে এবং ভবনের বাসিন্দাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। পাশাপাশি, এলাকার অন্যান্য ভবনেরও কাঠামোগত পরীক্ষা করার দাবি উঠেছে।
পরবর্তী পদক্ষেপ
অতিমাত্রায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি দ্রুত ভেঙে ফেলা হবে কি না, সেই বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে, প্রশাসন জানিয়েছে, বাসিন্দাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা তাদের প্রথম কাজ।
আরও খবর পড়ুনঃ আদানি গ্রীন থেকে আদানি এন্টারপ্রাইজ এক বিস্ময়কর বৃদ্ধি
উপসংহার
বাঘাযতীনের এই ঘটনা কেবল একটি বহুতল ভবনের সমস্যার নয়, বরং নগরায়নের সময় নীতিগত গাফিলতির একটি বড় উদাহরণ। এই ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে প্রশাসন ও নির্মাণ সংস্থাগুলির আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা অত্যন্ত জরুরি।
![]() |
BREAKING NEWS TODAY'S |
আপডেট পেতে, আমাদের সাথেই থাকুন ! পাশে থাকুন ৷ খবরের সাথেই থাকুন ! Breaking News Todays সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি: Facebook, Facebook page, Whatsapp Group.
0 মন্তব্যসমূহ