ডোনাল্ড ট্রাম্প বিদেশি সহায়তা বন্ধ করলেন, শুধু দুই দেশ পাবে৷
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে বিদেশি সহায়তা কার্যক্রম স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে এই সিদ্ধান্তের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে ইসরায়েল ও মিশরের সামরিক সহায়তা এবং জরুরি খাদ্য সহায়তা। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ফাঁস হওয়া অভ্যন্তরীণ নথিতে এই তথ্য জানা গেছে।
নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর নেতৃত্বে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ৮৫ দিনের মধ্যে সব বৈদেশিক সাহায্য পুনর্মূল্যায়নের জন্য একটি অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনা করা হবে। এরপর রুবিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে সুপারিশ প্রদান করবেন।
এই সিদ্ধান্তের ফলে উন্নয়ন সহায়তা থেকে সামরিক সাহায্য পর্যন্ত সবকিছুই প্রভাবিত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের বৈদেশিক সাহায্য নীতির পরিবর্তন নির্দেশ করে এবং এটি 'আমেরিকা ফার্স্ট' নীতির প্রতিফলন। তারা আরও উল্লেখ করেন, এই সিদ্ধান্তের ফলে চীনের 'বেল্ট অ্যান্ড রোড' উদ্যোগের সাথে প্রতিযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান দুর্বল হতে পারে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প সহায়তা বিদেশী দুই দেশ ইসরাইল এবং মিশর।
ইসরায়েল ও মিশরকে এই সিদ্ধান্তের বাইরে রাখা হয়েছে। ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য সামরিক সহায়তা পেয়ে আসছে, যা দেশটির নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। মিশর ১৯৭৯ সালে ইসরায়েলের সাথে শান্তিচুক্তি করার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বড় অঙ্কের প্রতিরক্ষা তহবিল পেয়ে আসছে।
![]() |
বিদেশে সহয়তা কার্যক্রম স্থগিত করছে যুক্তরাষ্ট্র - প্রতিকী ছবি ৷ |
বিস্তারিত পড়ুনঃ বিদেশে সহয়তা কার্যক্রম স্থগিত করছে যুক্তরাষ্ট্র।
এই সিদ্ধান্তের ফলে ইউক্রেনের মতো দেশগুলো, যারা রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করছে, তাদের জন্য মার্কিন সহায়তা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এছাড়া, আফ্রিকার উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এইচআইভি প্রতিরোধে যে অ্যান্টি-রেট্রোভাইরাল ওষুধ কেনা হত, তাও স্থগিত হয়ে যাবে, কারণ এই ওষুধগুলি মূলত আমেরিকার অর্থ সাহায্যেই কেনা হত।
বাংলাদেশেও এই সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়তে পারে। বিগত ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা, জ্বালানি, পরিবেশ, খাদ্যনিরাপত্তা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং আরও অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহায়তা দিয়ে আসছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশে মার্কিন সহায়তা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ওয়াশিংটন দীর্ঘদিন ধরে বৈদেশিক সাহায্যকে তার পররাষ্ট্রনীতির একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, তারা উন্নয়নে গুরুত্ব দেয়, যা চীনের থেকে আলাদা। কারণ, চীন সাধারণত প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণের দিকে বেশি মনোযোগী। এই সিদ্ধান্তের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সাহায্য নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর সোমবার ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে ৯০ দিনের জন্য বৈদেশিক সাহায্য স্থগিত করেন। তবে এটি কীভাবে বাস্তবায়িত হবে, তা তখনই স্পষ্ট ছিল না। দারিদ্র্যবিরোধী সংগঠন অক্সফাম বলেছে, ট্রাম্প বৈদেশিক সাহায্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের ঐকমত্য থেকে সরে আসছেন।
এই সিদ্ধান্তের ফলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা ও প্রভাব নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতিতে একটি বড় পরিবর্তন নির্দেশ করে এবং এটি বিশ্ব রাজনীতিতে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে।
আপডেট পেতে, আমাদের সাথেই থাকুন ! পাশে থাকুন ৷ খবরের সাথেই থাকুন ! Breaking News Todays সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি: Facebook, Facebook page, Whatsapp Group.
0 মন্তব্যসমূহ