বাংলাদেশের মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের সঙ্গে নতুন সম্পর্ক গড়তে চান। তিনি একাত্তরের সমস্যা মেটাতে চান।
মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন মাত্রায় নিয়ে যেতে আগ্রহী। তিনি এ বিষয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে বৈঠকে আলোচনা করেছেন।
মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার পাকিস্তানের সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে। কায়রোর ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের সময় ইউনূস শাহবাজর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে আলাপ করেছেন। বৈঠকে শাহবাজ এবং ইউনূসের মধ্যে বাণিজ্য, তথ্যপ্রযুক্তি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ‘বাসস’ জানিয়েছে, ইউনূস শাহবাজকে ১৯৭১ সালের অমীমাংসিত সমস্যাগুলি সমাধানের প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি একটি স্থায়ী সমাধানের প্রত্যাশা করছেন।
১৯৭১ সালের অমীমাংসিত সমস্যাগুলি সমাধানের প্রস্তাব দিয়েছেন।
![]() |
বৃহস্পতিবার মিশরের রাজধানী কায়রোয় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ
শরিফের সঙ্গে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি:
এক্স। |
‘বাসস’ অনুযায়ী, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীও অমীমাংসিত সমস্যা সমাধানে আগ্রহী। ইউনূসকে তিনি বলেছেন, ১৯৭৪ সালে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি (ভারত, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান) সমস্যাগুলি সমাধান করেছে। তবুও যদি কিছু অমীমাংসিত থাকে, সেগুলি খতিয়ে দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
যে ছবিগুলো আপনারা দেখতে পাচ্ছেন "ইউনূস এবং শাহবাজ উভয়েই সামাজিক মাধ্যমে এই বৈঠকের ছবিগুলি শেয়ার করেছেন"। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের প্রসারে আলোচনা হয়েছে। একই সাথে তথ্যপ্রযুক্তি, রাসায়নিক, চর্মদ্রব্য এবং চিকিৎসা সরঞ্জামের বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার কথাও উল্লেখ করেছেন। সম্প্রতি বাংলাদেশ পাকিস্তানিদের জন্য ভিসা ব্যবস্থাটি আরও সহজ করেছে। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ‘ডন’ জানায়, দু'দেশের ভ্রমণ সংক্রান্ত ইউনূস সরকারের সাম্প্রতিক উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন শাহবাজ। ‘ডন’-এর প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে, পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে পাঠানো পণ্যের কঠোর যাচাইয়ের শর্ত শিথিল করার বিষয়টিতে আলোচনা হয়েছে। পাকিস্তান থেকে আসা যাত্রীদের 'চেকিং' এর জন্য আগে ঢাকা বিমানবন্দরে যে কঠোর ব্যবস্থা ছিল, সেটি এখন উঠে গেছে। ইউনূস সরকারের এই উদ্যোগকেও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী সমর্থন করেছেন।
আরও পড়ুন : আমরা কলার চুষবো না, নিউক্লিয়ার বম্ব আক্রমণ করা হবে’ ভারতকে সতর্ক করেছেন বাংলাদেশের অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্তা মোদিকেও হুমকি
শেখ হাসিনার মেয়াদে বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্ক খুব বেশি ঠিকঠাক ছিল না। এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারতের সাথে এবং কিছু ক্ষেত্রে চীনের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্কের ওপর অধিক গুরুত্ব দিয়েছিলেন হাসিনা। ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের সময় পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কস্থাপনকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তাতে উল্লেখ করা হয়েছে পাকিস্তান থেকে খাদ্যশস্য আমদানির বিষয়টিও বিবেচনায় রয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের। যদিও তারা যুক্তি দিচ্ছেন যে, তারা কোনো এক দেশের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে বহুপাক্ষিক সম্পর্কের ওপর গুরুত্ব দিতে চাইছেন।
পাকিস্তানিদের জন্য ভিসা ব্যবস্থাটি সম্প্রতি আরও সহজ করার উদ্যোগ নিয়েছে ইউনূসের প্রশাসন। বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে পাকিস্তানিরা যাতে সহজে ভিসা পান, সে বিষয়ে গুরুত্বারোপ করছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। বাংলাদেশের সব দূতাবাস এবং উপদূতাবাসে এই বিষয়ে নির্দেশনা পাঠিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। ইউনূস পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নত করতে আগ্রহী, এটির আভাস সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনাতে ধরা পড়েছে। বৃহস্পতিবার শাহবাজ-ইউনূস বৈঠকে এই বার্তাটি উঠে এসেছে।
আপডেট পেতে, আমাদের সাথেই থাকুন ! পাশে থাকুন ৷ খবরের সাথেই থাকুন ! Breaking News Todays সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি: Facebook, Facebook page, Whatsapp Group.
0 মন্তব্যসমূহ