আমেরিকার বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘থাড’ এবং যুদ্ধবিমান F-35 এর হুবহু তৈরি HQ-19 এবং J-35A কে এ বার দুনিয়ার সামনে আনতে চাইছে চিন। বেজিংয়ের নতুন অস্ত্র ঘিরে কোথায় ভয় নয়াদিল্লির ?
অস্ত্রের বাজারে চিন আমেরিকাকে পিছনে ফেলে দিয়ে কড়া টক্কর ।
গোটা দুনিয়ার সামনে নিজেকে ক্ষমতা শালি দেখানোর জন্য এবং ফাইটার সাথে সাথে নতুন ‘বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা’কে (এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম) প্রকাশ্যে আনছে চিন। যার সঙ্গে ইতিমধ্যেই ওয়াশিংটনের তৈরি ‘থাড’-এর (টার্মিনাল হাই অলটিচ্যুড এরিয়া ডিফেন্স) সঙ্গে তুলনা টানা শুরু হয়েছে। HQ-19 ছাড়াও ঝুহাই এয়ারশোতে পঞ্চম প্রজন্মের স্টেলথ যুদ্ধবিমান J-35A ওড়াবে পিএলএ। এই শোয়ের মাধ্যমেই এই যুদ্ধবিমানকে প্রথম বার সর্বসমক্ষে আনতে চলেছে বেজিং। যার আকৃতির সঙ্গে আমেরিকার তৈরি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের যথেষ্ট মিল রয়েছে। ড্রাগন চিন সেনার জন্য ঘরের মাটিতে তৈরি প্রথম স্টেলথ যুদ্ধবিমানের নাম ‘FC-31 রেখেছিল চিন।
![]() |
J-35A |
পরে নাম পাল্টে সেই নাম দেওয়া হয় J-35A রাখা হয়। এগুলি আমেরিকার তৈরি F-35 এর তুলনায় অনেক সস্তা। আর তাই বিদেশের বাজারে তা বিক্রির পরিকল্পনা রয়েছে বেজিংয়ের।
বেজিংয়ের নতুন অত্যাধুনিক অস্ত্র তৈরী নিয়ে দিল্লির কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ । এই বছরেরই ১২ নভেম্বর থেকে চিনের গুয়াংডং প্রদেশের সেনাঘাঁটিতে শুরু হচ্ছে পঞ্চদশ ঝুহাই এয়ারশো। সেখানে শক্তি প্রদর্শন করবে পিপল্স লিবারেশন আর্মি (পিএনএ)। যা চলবে এ মাসের ১৭ তারিখ পর্যন্ত। ওই এয়ারশোতেই লালফৌজ অত্যাধুনিক বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রকাশ্যে আনতে চলেছে বলে সূত্র মারফত মিলেছে খবর। ড্রাগনল্যান্ডের সরকারি সংবাদমাধ্যম ‘গ্লোবাল টাইমস’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ বারের এয়ারশোর মূল আকর্ষণ হতে যাচ্ছে ‘HQ-19 ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
![]() |
HQ-19 |
যা যুদ্ধের সময়ে একাধিক স্তরের আক্রমণ ঠেকাতে ব্যবহার করা যাবে বলে দাবি করেছে চিন। যা নিয়ে চিন্তায় আমেরিকা-সহ পশ্চিম ইউরোপের অধিকাংশ দেশ। বেজিংয়ের এই নতুন হাতিয়ার নিয়ে এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) চাঞ্চল্যকর পোস্ট করেছেন পিএলএ গবেষক রিক জো। তাঁর কথায়, ‘‘ড্রাগন সেনা অস্ত্রটি সম্পর্কে যা যা দাবি করেছে, তার সবটা সত্যি হলে, এটি কৌশলগত দিক থেকে চিনকে অনেকটা এগিয়ে দেবে। তবে এর সঙ্গে আমেরিকার থাড বা রাশিয়ার ‘এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ’-এর মতো অতিশক্তিশালী বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার তুলনা টানা যায় কি না, তা স্পষ্ট নয়।
গ্লোবাল টাইমস সূত্রে খবর ২০২১ সালে প্রথম বার HQ-19 অ্যান্টি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রর পরীক্ষা করে চিন। ২০২০-’২১ আর্থিক বছরে প্রকাশিত আমেরিকার প্রতিরক্ষা মূল্যায়ণ দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই এই হাতিয়ার ব্যবহার করছে পিএলএ। যদিও সরকারি ভাবে এই নিয়ে বেজিংয়ের তরফে কিছু বলা হয়নি। সমর বিশেষজ্ঞদের কথায়, বায়ুমণ্ডলের বাইরের দিক থেকে ধেয়ে আসা ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র চিহ্নিত করে তা মাঝ আকাশেই ধ্বংস করতে পারে HQ-19 এতে রয়েছে উন্নত রাডার। আমেরিকার থাড বা রাশিয়ার এস ৪০০-র মতোই এতে রয়েছে ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসকারী ক্ষেপণাস্ত্র।
তবে এটির সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সেখানে পাওয়া যায়নি।পশ্চিমি সংবাদমাধ্যমগুলির একাংশের দাবি, নতুন এই বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাটির মাধ্যমে হাজার থেকে তিন হাজার কিলোমিটার পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মাঝ আকাশে ধ্বংস করতে পারবে ড্রাগন সেনা। এতে সম্ভবত ‘হিট টু কিল’ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে যা আমেরিকান থাডে রয়েছে।কী এই হিট টু কিল প্রযুক্তি? বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, এতে শত্রুর ছোড়া ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র চিহ্নিত করা গেলে এইচকিউ-১৯ থেকে উড়ে যাবে একটি ক্ষেপণাস্ত্র। যা ওই আগত ক্ষেপণাস্ত্রের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটাবে এবং তাকে ধ্বংস করবে।
এই প্রযুক্তিতে নির্ভুল ভাবে ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করা সম্ভব। যা এর কার্যকারিতাকে বাড়িয়ে দিয়েছে।২০০৮ সালে আমেরিকান সেনাবাহিনীর হাতে আসে থাড। এর নির্মাণকারী সংস্থা হল ‘লকহিড মার্টিন মিসাইলস্ অ্যান্ড ফায়ার কন্ট্রোল’। স্বল্প -মাঝারি এবং দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রকে চিহ্নিত করে তা মাঝ আকাশেই উড়িয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে থাডের। যা Duplicate করে HQ-19 বায়ু প্রতিরক্ষাটিও ব্যবস্থা বেজিং তৈরি করেছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।চলতি বছরের অক্টোবরে হামাস-হিজ়বুল্লা-হুথি এবং ইরানের রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ঠেকাতে ইজ়রায়েলের হাতে থাড তুলে দেয় ওয়াশিংটন। এটি পরিচালনার জন্য ইহুদি ভূমিতে সৈনিকও পাঠিয়েছেন তারা।
থাড চলে আসার পর নতুন করে ইজ়রায়েলে বড় আকারের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর সাহস পায়নি তেহরান।বর্তমানে রাশিয়ার তৈরি S-400 বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করছে পিএলএ। এর 400 কিলোমিটার ব্যাসার্ধে ছোট-বড় যে কোনও ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করার ক্ষমতা রয়েছে। S-400-এ রয়েছে সার্ফেস টু এয়ার মিসাইল বা মাটি থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র । যার সঙ্গে HQ-19 এর ক্ষেপণাস্ত্রগুলির যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। এটা আরও অত্যাধুনিক ।
![]() |
BREAKING NEWS TODAY'S |
আপডেট পেতে, আমাদের সাথেই থাকুন ! পাশে থাকুন ৷ খবরের সাথেই থাকুন ! Breaking News Todays সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি: Facebook, Facebook page, Whatsapp Group.
0 মন্তব্যসমূহ